Tuesday, September 14, 2010

ডেড রেকোনিং : মেমোরিজ অব দি ১৯৭১ বাংলাদেশ ওয়ার-শর্মিলা বোশ (কপি পেস্ট)...

ডেড রেকোনিং : মেমোরিজ অব দি ১৯৭১ বাংলাদেশ ওয়ার-শর্মিলা বোশ (কপি পেস্ট)...

লিখেছেন সত্য কথা ১৯ মে ২০১১, রাত ১২:৫৭




শর্মিলা বোস জন্মসূত্রে একজন বাঙালি হিন্দু। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কলকাতায় অবস্খান করে বাংলাদেশ থেকে প্রাণভয়ে ভারতে যাওয়া শরণার্থীদের দুর্দশা দেখেছেন। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের ফলে এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে হিন্দুরাই অধিক যাতনার শিকার হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শর্মিলা বোস সম্প্রতি প্রকাশিত তার ‘ডেড রেকোনিং : মেমোরিজ অব দি ১৯৭১ বাংলাদেশ ওয়ার’ গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধকে ‘গৃহযুদ্ধ’ বলে উল্লেখ করে পাকিস্তানি সৈন্যদের ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা ও দুই লক্ষাধিক মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনাকে ‘অবাস্তব ও অতিরঞ্জিত’ বলে বর্ণনা করে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তির তীব্র সমালোচনা ও ভর্ৎসনার মুখোমুখি হয়েছেন। ১৯৭১ সালে শর্মিলা বোসের বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর, তাই তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কী জানেন এবং তিনি কী করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেন, এমন প্রশ্নও তোলা হয়েছে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্খা আইএসআই’র কাছ থেকে অর্থ নিয়ে গ্রন্থটি রচনা করেছেন কি না, তাকে সরাসরি এমন প্রশ্নও করা হয়েছে গত ১৫ মার্চে যে দিন তিনি ওয়াশিংটন ডিসি’র উড্রো উইলসন সেন্টারে গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনায় বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যদানকারীদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলামও ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে ৩৭.৫০ ডলার মূল্য দিয়ে যারা বইটি কিনে তার অটোগ্রাফ নেন, তার সমালোচনাকারীরা তাদের ’জামায়াতি’ বলে অভিহিত করেন।



অর্থাৎ যিনি গ্রন্থটি লিখেছেন অনুষ্ঠানে উপস্খিত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকগুলোর দৃষ্টিতে তিনি অপরাধী, কারণ তাদের দৃষ্টিতে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করেছেন, আর যারা তার গ্রন্থটি কিনেছেন তারাও অপরাধী, কারণ তারা বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাসে বিশ্বাসী নন বলেই বিকৃত তথ্যে ঠাসা বইটি কিনেছেন। কিন্তু শর্মিলা বোসের ভাগ্য এক দিক থেকে ভালো যে তথ্য ও গবেষণানির্ভর না হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের ‘প্রকৃত’ ইতিহাস হিসেবে গত চার দশক থেকে প্রতিষ্ঠিত ও চলে আসা ইতিহাসের বুকে ছুরিকাঘাত করে বহাল-তবিয়তে তিনি টিকে আছেন। তিনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হতেন এবং বাংলাদেশে বসবাস করে এ কর্মটি করতেন তাহলে তার খবর ছিল। বাংলাদেশের সাবেক একজন সচিব এ টি এম ফজলুল করিম, যিনি কবি আবু করিম নামে সুপরিচিত, তিনি ২০০৬ সালে ‘বাগানে ফুটেছে অসংখ্য গোলাপ’ নামে তার কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতায় দেশের ইতিহাসে উল্লিখিত মুক্তিযুদ্ধে জীবন বিসর্জনকারীদের স্ফীত পরিসংখ্যান এবং কাল্পনিক কিছু চরিত্রের উল্লেখ করে ব্যঙ্গাত্মক একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। পাশ্চাত্যে জীবিত ও মৃত রাজনীতিবিদদের নিয়ে এমন ব্যঙ্গাত্মক কবিতা রচনা, কার্টুন অঙ্কনের ঘটনা অহরহ ঘটে, যা নিয়ে কেউ খুব মাথা ঘামায় না। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করার ৪৮ দিনের মাথায় আবু করিম তার গুরুত্বপূর্ণ চাকরি হারান একটি মাত্র কবিতা লেখার মাধ্যমে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে গিয়ে। বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয় তাকে। আওয়ামীপন্থী দু’জন আলেম তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারগুলোর অন্যতম একটি অধিকার। কিন্তু কোনো বিশেষ দল বা বিশেষ ব্যক্তি ক্ষমতায় থাকলে সেই দল বা ব্যক্তির পছন্দের বাইরে ভিন্ন কোনো মত প্রকাশ করলে বাংলাদেশে কিভাবে তার মূল্য দিতে হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক যায়যায়দিন-এর সম্পাদক শফিক রেহমান এবং অতিসম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। শফিক রেহমান তবু দেশ ছেড়ে সেনাশাসক এরশাদের থাবা থেকে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিলেন, কিন্তু মাহমুদুর রহমানের শেষ রক্ষা হয়নি। প্রশ্নবিদ্ধ একটি নির্বাচনে নির্বাচিত গণতন্ত্রের মানসকন্যাখ্যাত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর রোষানলে পড়ে তাকে শারীরিকভাবে নিপীড়িত হতে হয়েছে। কারাগারে কাটাতে হয়েছে দশটি মাস এবং প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে যারা সচেষ্ট তাদের দায়ের করা প্রায় অর্ধশত মামলায় হাজিরা দিতে তাকে এখনো এক জেলা থেকে আরেক জেলায় দৌড়াতে হচ্ছে।



শর্মিলা বোসের গ্রন্থটির নাম ‘ডেড রেকোনিং’ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস। ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে অবদান রাখার জন্য কিংবদন্তিতুল্য একটি নাম নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের পরিবারে এই সদস্যের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে। নেতাজীর ভাইয়ের মেয়ে তিনি। তার মা কৃষäা বোস পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় নানাভাবে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে এবং বাংলাদেশের শরণার্থীদের সহযোগিতা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলেও শর্মিলা তার শৈশব কাটিয়েছেন কলকাতায়। সাংবাদিকতাও করেছেন কলকাতার আনন্দবাজার গ্রুপের হয়ে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করে বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।



১৯৭০ সালে পাকিস্তানের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার একটি রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সামরিক উপায়ে করতে গিয়ে পরিস্খিতিকে সশস্ত্র সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দেয়, এক পর্যায়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের অবসান ঘটে। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের পর্যায়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তার গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয় এবং এ উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ওপর লিখিত বেশির ভাগ গ্রন্থ থেকে তথ্য আহরণ করেন, যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের স্মৃতিকথার নোট নেন এবং আরো বিস্তারিত জানতে, বিশেষত তার পঠিত গ্রন্থাদিতে বিশেষভাবে উল্লিখিত পাকিস্তানি ধ্বংসযজ্ঞের স্খানগুলো পরিদর্শন করে, হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া লোকসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করেন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্খান সফর করে। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলে তার এ কাজ। এ গবেষণা পরিচালনা করতে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সত্য উদঘাটন ও বিবদমান পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় উপনীত হওয়ার অনুপস্খিতিতে বাংলাদেশের সমাজ এখনো দারুণভাবে বিভাজিত রয়ে গেছে। শর্মিলা বোস ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখিত একটি নিবìধ পাঠ করেন, যা ভারতের একটি জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার পর যেভাবে তার কাছে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে তাতে দেখা যায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারীদের প্রত্যেকে ভেবেছেন যে লেখাটায় তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটলেই তা সঙ্গত হতো। এ লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর শর্মিলা বোস সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিকতর তথ্য সংগ্রহ করতে আবার বাংলাদেশে গেলে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকজন তাকে সহযোগিতা করতে তেমন আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকেরা তাকে অনুপ্রাণিত করেছেন গবেষণা অব্যাহত রাখতে। প্রতিবাদ ও সমালোচনায় তিনি দমে না যাওয়ায় গ্রন্থটি আলোর মুখ দেখেছে।



গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনার পর থেকে শর্মিলা বোসের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার চলছে এবং তা একতরফাভাবেই চলছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের যারা অনুষ্ঠানে উপস্খিত ছিলেন তারা দু-একটি প্রশ্ন করা ছাড়া শর্মিলা বোসের প্রতি তাদের বাণ নিক্ষেপ করতে না পারলেও অনুষ্ঠান শেষে নিজেদের মধ্যে যে বাকচারিতা করেছেন তার ভিত্তিতে নিউইয়র্কের কোনো কোনো বাংলা সাপ্তাহিক রিপোর্ট করেছে, ‘প্রতিবাদের মুখে চুপসে গেলেন শর্মিলা বোস’। কোনো প্রতিবাদই হয়নি সেখানে, কারণ এই অধমের সেখানে উপস্খিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। দর্শকদের পক্ষ থেকে যে দু’টি প্রশ্ন করা হয়েছিল বোস শান্তভাবে প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়েছেন। তার বক্তব্যে কেউ বাধা সৃষ্টি করেনি এবং অনুষ্ঠানে আনা সব বই তার টোগ্রাফসহ বিক্রি হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত ছিল, তা সত্ত্বেও শ্রোতাদের একজন মোটামুটি সবিস্তারে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা ও দুই লাখ মহিলাকে ধর্ষণ করার দাবি সম্পর্কে শর্মিলা বোসের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এসব পরিসংখ্যানকে ‘ওয়াইল্ড ইমাজিনেশন’ বলে নাকচ করে দেন। অন্য একজন জানতে চান, এ ধরনের গ্রন্থ রচনার জন্য তিনি ‘আইএসআই’র কাছ থেকে অর্থ লাভ করেছেন কি না, বোস এক শব্দে তার প্রশ্নের উত্তর দেন, ‘না’।



কিন্তু তাতে সমালোচনা থেমে থাকেনি, সমালোচনা আরো আসবে যখন গ্রন্থটি অধিক সংখ্যক পাঠকের হাতে পৌঁছবে। যেকোনো গ্রন্থাকারের সার্থকতা তার কর্মের সমালোচনার মধ্যে। কিন্তু সমালোচনা আবশ্যিকভাবেই গ্রন্থনির্ভর হওয়া উচিত। অধিকতর বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য সমালোচনা করা কিছুতেই সঙ্গত হতে পারে না। শর্মিলা বোসের গ্রন্থটির আদ্যোপান্ত পাঠ করার সুযোগ আমার হয়েছে। ইতোমধ্যে যারা গ্রন্থটির তথ্য-উপাত্ত এবং বিবরণ সংগ্রহের জন্য শর্মিলা বোস স্বাধীনতাবিরোধীদের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন, তারা গ্রন্থের শেষে জুড়ে দেয়া তালিকাটি দেখেননি। তিনি যাদের শরণাপন্ন হয়েছেন সে তালিকার বেশির ভাগই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী, শহীদ পরিবারের সদস্য, পাকিস্তানিদের গুলির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তি, বাংলাদেশে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন এমন কিছুসংখ্যক পাকিস্তানি সেনা অফিসার। এ ছাড়া যে গ্রন্থগুলো থেকে তিনি উদ্ধৃতি দিয়েছেন তার বেশির ভাগই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ব্যক্তিদের দিয়ে এবং যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনা অফিসারদের দিয়ে চিত্রিত।



বইটি পাঠ করে যারা মন্তব্য লিখেছেন তাদের মতে কল্পকাহিনীর ওপর ভিত্তি করে রচিত ইতিহাসকে সাদা করতে শর্মিলা বোস যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধে পাকিস্তানের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঐতিহাসিক বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যার ফলে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ দল তাকে পাকিস্তানের নৃশংস সামরিক বাহিনীর মিত্র ও রক্ষাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর গত দেড় মাসে গ্রন্থটির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হওয়ার চেয়েও অধিক সমালোচনার শিকার হয়েছেন স্বয়ং শর্মিলা বোস। তাকে পাকিস্তানে গোয়েন্দা সংস্খা আইএসআই’র কাছ থেকে অর্থলাভকারী পাকিস্তানের ভাড়াটে গবেষক হিসেবে অভিযোগ করা হচ্ছে। বলা হয়েছে, তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের কাছ থেকে তার গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করেছেন। আরো অভিযোগ করা হয়েছে, শর্মিলা বোস দাবি করেছেন পাকিস্তানি সৈন্যরা বাংলাদেশে কোনো মহিলাকে ধর্ষণ করেনি। শর্মিলা বলেছেন, ‘আমি শুধু পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে নিহত ও ধর্ষিতদের অতিরঞ্জিত সংখ্যার দিকটি উল্লেখ করেছি। যেকোনো যুদ্ধের ইতিহাস সব সময় বিজয়ী পক্ষের বর্ণনা এবং ১৯৭১ও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। যুদ্ধের ৯ মাসে পাকিস্তানি সৈনিক ও তাদের সহযোগীদের দিয়ে নিহত ও ধর্ষিতের যে স্ফীত সংখ্যা দেখানো হচ্ছে তা অবাস্তব। এ নিয়ে অদ্যাবধি বাংলাদেশে কোনো গবেষণা বা জরিপ হয়নি এবং নিহত ও ধর্ষিতের যে সংখ্যা দাবি করা হচ্ছে, তা গ্রহণযোগ্য করার পক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বরং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার হতাহতের সংখ্যা নির্ণয়ে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সে কমিটির কাছে নিহতের দাবি নিয়ে আসার ঘটনা ছিল মাত্র ২,০০০টি। গ্রন্থটির ভূমিকায় তিনি বলেছেন, ‘বিভ্রান্তিকর, অসম্পূর্ণ ও অনির্ভরযোগ্য তথ্য থেকে সত্য বের করার চেষ্টায় ভুলের অবকাশ থাকতে পারে, কিন্তু সাহসে ভর করে, প্রমাণ ও সংশ্লিষ্টতার ওপর ভিত্তি করে, সব পক্ষের প্রতি সুবিচার করার লক্ষ্যে খোলা মনে গবেষণায় নিয়োজিত হলে একটি আদর্শ গন্তব্যে অবশ্যই উপনীত হওয়া সম্ভব।’ গ্রন্থটি কল্পকাহিনীনির্ভর ইতিহাসের বিভ্রান্তি দূর করে ইতিহাসকে তথ্যভিত্তিক ও সত্যাশ্রয়ী করার প্রয়াস বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।



১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের ওপর আক্রমণ শুরু করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ছাত্রাবাস জগন্নাথ হল ও ইকবাল হল ছিল আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য। সে হামলায় অগণিত ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী নিহত হয়েছেন দাবি করা হলেও শর্মিলা বোস তার গ্রন্থে সেই রাতের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত নিহতদের হিসাবের উল্লেখ করে বলেছেন, ২৫ মার্চ রাতে ক্যাম্পাসে ও যুদ্ধের ৯ মাসে দেশের বিভিন্ন স্খানে বিভিন্ন সময়ে নিহতের সংখ্যা যোগ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৪৯ জন নিহত হয়েছেন, (পৃষ্ঠা-৬৭)। অনুরূপ পরদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পুরান ঢাকার হিন্দুপ্রধান শাঁখারীপট্টিতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় আট হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে দাবি করে ঢাকায় অবস্খানরত ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি সাংবাদিক এন্থনী ম্যাসকারেনহাস লন্ডনের সানডে টাইমসে কোনো সূত্রের উদ্ধৃতি ছাড়াই রিপোর্ট করেন। ম্যাসকারেনহাসের বর্ণনা মতে, ‘পাকিস্তানি সৈন্যরা দু’দিক থেকে রাস্তা বìধ করে দেয়। বাড়ি বাড়ি প্রবেশ করে তাদের অনুসìধান করে।’ এটা কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ নয়, কারণ ম্যাসকারেনহাস সেখানে উপস্খিত ছিলেন না এবং তার তথ্যের কোনো সূত্রও উল্লেখ করেননি, যা এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভুল। কিন্তু পাকিস্তানিদের গুলির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী অমিয় কুমার সুর, ১৯৭১ সালে যার বয়স ছিল ৩০ বছর, শর্মিলা বোস তার বরাত দিয়ে বলেছেন, ‘২৬ মার্চ সৈন্যরা শাঁখারীপট্টিতে আসে দিনেরবেলায়। সৈন্যরা বাড়ির ছাদে ওঠে। ৪০ নম্বর বাড়ির নীলকান্ত দত্ত এক রুম থেকে আরেক রুমে ছোটাছুটি করে খোলা চত্বর অতিক্রম করার সময় একজন সৈন্য ছাদের ওপর থেকে তাকে গুলি করে। অমিয় সুর ও তার পরিবার বাড়ির ভেতরে অক্ষত ছিলেন (পৃষ্ঠা-৭৩)।



শাঁখারীপট্টিতে জীবিত প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সেনাসদস্যরা বাড়ি বাড়ি যায়নি। তারা একটি মাত্র বাড়ি ৫২ নম্বরে প্রবেশ করে। শর্মিলা বোসকে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি যে, সেই বাড়িটিই তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো, “কেন... সম্ভবত বাড়িটি এলাকায় সবচেয়ে বড় এবং দেখতে সমৃদ্ধ ছিল বলে। অমিয় সুর পরে স্বয়ং মৃতদেহগুলো দেখেন, আঙিনায় পড়ে ছিল একটি শিশুসহ ১৪ থেকে ১৬টি মৃতদেহ। অন্য সব বাসিন্দা যারা বাড়ির অভ্যন্তরে ছিল তারা বেঁচে গেছে। কিন্তু কেউই আর জীবনের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত ছিল না এবং সবাই শাঁখারীপাড়া ত্যাগ করতে শুরু করে। অমিয় সুর শাঁখারীপট্টি ছাড়েন ২৮ মার্চ রোববার। তখন শাঁখারীপট্টি পুরোপুরি শূন্য হয়ে গিয়েছিল। মৃতদেহগুলো সেখানেই পড়ে ছিল (পৃষ্ঠা-৭৪)। তার গ্রন্থে আরো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় স্খান পেয়েছে, তা হলো ১৯৭১ সালের ১ মার্চের পর থেকে এপ্রিল মাসের কিছু দিন পর্যন্ত অর্থাৎ পাকিস্তানি বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার আগে এবং ডিসেম্বর মাসে যুদ্ধ শেষে দেশের বিভিন্ন স্খানে অবাঙালি মুসলমানদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের সম্পদ লুণ্ঠনের ঘটনা। বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে এ ঘটনাগুলোর ছিটকে যাওয়াকে শর্মিলা বোস রহস্যজনক বলে মনে করেন। কারণ, অবাঙালি মুসলমানেরা উপমহাদেশে একটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ভারত থেকে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল, সেখানে তাদের করুণ পরিণতি ইতিহাসে ঠাঁই পায়নি। তার মতে, যুদ্ধের শুরুতে ও যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে অন্তত এক লাখ অবাঙালি নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে। গ্রন্থটি সম্পর্কে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের এ ডার্ক মোজেস বলেছেন, “শর্মিলা বোসের ‘ডেড রেকনিং’-এ ইতিহাসের বিভ্রান্তি শুধরে দেয়া হয়েছে এবং তিনি সততায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাহসিকতার সাথে গ্রন্থটি লিখে মানবিক গুণাবলিরই বিকাশ ঘটিয়েছেন। এটি ওই অঞ্চলের ইতিহাসের কালো অধ্যায় নিয়ে বিতর্কে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করবে।”



‘দি আইডিয়া অব পাকিস্তান’-এর লেখক স্টিফেন কোহেন বলেছেন, “ইতিহাসের তথ্যকে সঠিক করার ক্ষেত্রে গবেষণার কঠোর পরিশ্রম ও আবেগপূর্ণ আগ্রহের ফসল ‘ডেড রেকনিং’। ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশ যুদ্ধের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক মর্ম অনুসìধানে এটি চমৎকার একটি গবেষণা। শর্মিলা বোস সত্যের সìধানে এবং সত্যের সেবা করার জন্য লিখেছেন। আমরা তার কাছে ঋণী।” ‘ডেড রেকনিং’ গ্রন্থটি রচনা করে শর্মিলা বোস একটি প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ড এমনিতেই নৃশংস ঘটনা, তার ওপর যদি একটি মৃতদেহকে ক্ষতবিক্ষত করা, চোখ উপড়ে ফেলা বা বুক চিরে হৃৎপিণ্ড বের করে ফেলার মতো কাহিনী যোগ করা হয়, তা নি:সন্দেহে পৈশাচিকতার পর্যায়ে পড়বে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসকের প্রসঙ্গ শর্মিলা বোস এনেছেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আলীম চৌধুরী এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফজলে রাব্বি। শর্মিলা বোসকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালক যে প্রকাশনাগুলো দেন তাতে বর্ণনা রয়েছে যে, ডা. চৌধুরীর চোখ উৎপাটন করা হয়েছিল এবং ডা. রাব্বির হৃৎপিণ্ড বের করে ফেলা হয়েছিল বক্ষ বিদীর্ণ করে। শর্মিলা বোস দুই শহীদের স্ত্রীর কাছে জানতে চান যে, মৃতদেহগুলো তারা কেমন দেখেছেন। তারা তাদের স্বামীদের দেহে একাধিক গুলির ক্ষত দেখেছেন, কিন্তু ডা. আলীমের চোখ জায়গামতো ছিল এবং ডা. রাব্বির বুকও বিদীর্ণ ছিল না বলে শর্মিলাকে জানান। গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, এ ধরনের নারকীয় বর্ণনা দিয়ে মূলত শহীদদের প্রিয়জনদের আরো আহত করা হয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে যা ঘটেছিল সেই বর্ণনা থেকে সরে আসা হয়েছে (পৃষ্ঠা-১৫৬)।

লেখকঃ আনোয়ার হোসেইন মঞ্জুত
সুত্রঃহিডেন ট্রুথ।
Click this link... 
শেয়ার করুনঃ
২৭৫ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
রেটিং +২/-১
রেটিং দিতে লগইন করুন
পাঠকের মন্তব্য:
269503
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:১৯
লাল বৃত্ত লিখেছেন :    
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:২৬
228680

সত্য কথা লিখেছেন : কি গো ভাই? এইসব ফাঁকিবাজি চলবেনা---- আপনার চিন্তাভাবনা ঢালুন। ফুল দিয়ে লাভ কি
হিহিহি.....ধন্যবাদ।
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:২৯
228681

লাল বৃত্ত লিখেছেন : এহ--- আরেকজনেরটা কপি করে... ছিঃ লজ্জা।
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:৪০
228686

সত্য কথা লিখেছেন : বিখ্যাত মানুষদের অনুকরণে কোন লজ্জা নাই    ।আর যদি কপি করাটা দোষ হয়ে থাকে,সে দোষে আপনি প্রথম অভিযুক্ত।আপনার প্রথম কমেন্টস আমাকে কপি করা হয়েছে।   
269521
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:৫৪
Desert_Falcon লিখেছেন : শর্মিলা বোস সঠিক কথাই বলেছেন, যে যুদ্ধের শেষে অবাঙ্গালীদের বাড়ী সম্পদ লুট করা হয়েছে, কারন আমারই খুব পরিচিত একজন তার পিতা মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধের পড়ে ৭১ এ তিনি বিহারীদের ২টা বাড়ী দখল নেন,
১৯ মে ২০১১; রাত ০২:১৩
228694

সত্য কথা লিখেছেন :   ।ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
269553
১৯ মে ২০১১; রাত ০৩:২৮
জ্ঞান-বৃক্ষ লিখেছেন : বইটা পড়া হয় নাই। শর্মিলা বোসের মতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের দাবি একটা মিথ!!! আপনি যেহেতু বইটা পড়েছেন, উনার মতে আমাদের শহীদের সংখ্যাটা কত এটা বলবেন কি? আপনার দেওয়া তথ্য অনুসারে তো ২/৩ হাজারের বেশী হওয়ার কথা না!!! উনার বই অনুসারে এই সংখ্যাটা কত সেটা পরিস্কার করলে খুশী হতাম। আরেকটা ব্যপার, মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ লাখের বেশী অবাঙ্গালী মারা গিয়েছিল বাঙ্গালীদের হাতে!!! তার মতে এই সংখ্যা নিশ্চয়ই বাঙ্গালী শহীদের থেকে বেশী!!! পূরান ঢাকার বাসিন্দা হওয়ার কারনে আমার প্রচুর অবাঙ্গালী বন্ধু আছে। কিন্তু তাদের কারো কাছেই কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের কোন আত্মীয়ের অথবা পরিচিত জনের গনহত্যায় নিহত হওয়ার কথা শুনিনি। এই কারনেই শর্মিলা বোসের বাঙ্গালী দ্বারা অবঙ্গালী হত্যার তত্ব আমার কাছে খুবি অস্বাভাবিক লাগছে।
আমাদের দেশে "মত প্রকাশের স্বাধীনতা" ব্যপারটাই ঘোলাটে অথবা অর্ধেক ভাবে মানা হয়। আপনি এখন সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান এবং কবি আবু করিমের মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলছেন। কেউ যদি এখন ইসলাম অথবা অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে অথবা লেখা লেখি শুরু করে, তখন আপনার প্রতিকৃয়া কি হবে? ঠিক একি ব্যপার আমাদের সরকারের মধ্যেও আছে, সেটা হোক বি এন পি, আওয়ামীলীগ অথবা অন্য যেকোন দল। যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কথা যে সরকারের পছন্দ হয়না, তার মত প্রকাশের আর কোন স্বাধীনতা থাকবে না, সেটা হোক কোন রাজনৈতিক ব্যপার অথবা কোন ধর্মীয় বা সামাজিক ব্যপার। কিন্তু প্রকৃত বাক স্বাধীনতা নিশ্চয়ই এই রকম হওয়ার কথা নয় কিনবা উচিতো নয়। যেমন একজন মানুষ যে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, ধারনা অথবা সামাজিক রীতিনিতির পক্ষে অথবা বিপক্ষে স্বাধীনভাবে যেকোন প্রকার ভয় ভীতি ছাড়াই তার মতামত দিতে পারব, সেটা হোক রাজনৈতিক, সামাজিক অথবা ধর্মীয়। এই ধরনের ব্যাংক স্বাধীনতা আমাদের দেশে কতটুকু আছে, সেটা আমাদের সবারই জানা।
১৯ মে ২০১১; রাত ০৪:২৮
228724

সত্য কথা লিখেছেন : এই বইয়ের সব তথ্যই শর্মিলা বোসের,এবং তা নেয়া হয়েছে হিডেন ট্রুথ নামক সংস্থা থেকে নেয়া।উপরের লিঙ্কটাতে গিয়ে দেখতে পারেন।ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
269887
১৯ মে ২০১১; দুপুর ০২:০৩
শামি লিখেছেন : আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই। কিন্তু মানুষ ১জন মরুক আর ১ লাখ মানুষ মারা গেসে সেটাই বড় কথা।আর ৭১-এ গ্রিহ যুদ্ধ ছিল না অন্য কিছু ছিল সেটা আমি জানি না। কেউ বলে দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ হয়েছে আবার কেউ বলে ভাষার জন্য যুদ্ধ হয়েছে। আমি এইখানে কনফিউজ। এখন আবার অনেকে বলবে আমি যুদ্ধাপরাধী। তাই আগেই বলে দিচ্ছি আমার বাবা কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা। তবে হ্যা তার কোনো সার্টিফিকেট নাই। তাকে যখন আমরা সার্টিফিকেট নিতে বলি তখন সে বলে আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি সার্টিফিকেটের জন্য নয়। 
১৯ মে ২০১১; দুপুর ০৩:০৯
229036

সত্য কথা লিখেছেন : শামি একজন মারা গেছে আর একলাখ মারা গেছে,এর মাঝে অনেক পার্থক্য আছে।যে জন্য কোন রাজনৈতিক দলই মুক্তিযোদ্ধে নিহতদের তালিকা করেনি।কারন সঠিক সংখ্যাটাকে তাদের অনেক ভয়।ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
270399
১৯ মে ২০১১; রাত ০৯:৪৫
hasanalbanna লিখেছেন : শর্মিলা বোসের লেখা থেকে ছোট আকারের কিছু কিছু চুম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরুন। বড় লেখা পড়া খুবি কষ্টকর।
২০ মে ২০১১; রাত ০২:০৪
229865

সত্য কথা লিখেছেন : একটু কস্ট করে ফেলেন,ইনশাআল্লাহ পড়ে সময় পেলে চূম্বক অংশ লিখব।ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
303210
১৬ জুন ২০১১; সকাল ০৯:৪৭
koutilla লিখেছেন : কি রে ভাই আপনি মানুষ না প্লাষ্টিক, অনুভূতি আছে কি না গায়ে হাত দিয়ে দেখেন। আমার মনে হয় আপনি যুদ্ধ দেখেছেন, কিন্তু যুদ্ধ যে যাননি এই যুক্তির উপর আমার বিশ্বাস আছে।
১৭ জুন ২০১১; রাত ১২:১৫
264585

সত্য কথা লিখেছেন : বূঝলামনা আপনি কাহাকে বলিলেন????যুদ্ধের সময় শর্মিলা বোসের বয়স ছিল ১২,লিখাতেই বলা হয়েছে।আর মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরে আমার জন্ম,আমি যুদ্ধ দেখব কিভাবে???ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
308558
২১ জুন ২০১১; রাত ০৪:১১
অমিত হাসান লিখেছেন : 
২১ জুন ২০১১; রাত ০৪:৩৭
270011

সত্য কথা লিখেছেন :     

Sunday, August 1, 2010

ঝুম একটা বৃস্টি.........আমার অপেক্ষা।

ঝুম একটা বৃস্টি.........আমার অপেক্ষা।

লিখেছেন সত্য কথা ১৮ মে ২০১১, বিকেল ০৫:২৬
একটা সময় ছিল,যতোবার বৃস্টি হতো ততোবার ভিজতাম।গভীর রাতে হঠাৎ ঘূম ভেঙ্গে যেত,সজাগ হয়ে দেখতাম মুষলধারে বৃস্টি হচ্ছে।ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে নেমে যেতাম উঠানে।রাত দুপুরে ঘুম থেকে উঠে বৃস্টিতে ভিজছি এটা একটা কমন ব্যপার আমার জন্য।কিন্তু কেন জানি অনেক অনেকদিন ধরে বৃস্টিটা ভিজা হচ্ছেনা।বৃস্টি হলে মূগ্ধ হয়ে এখনো তাকিয়ে থাকি,কিন্তু বৃস্টিতে ভিজা হয়ে উঠেনা এখন আর।

কিন্তু আজ খুব ইচ্ছে করছে,বৃস্টিতে গোসল করি।অনেক অনেক সময় নিয়ে ভিজি।কোন কারন ছাড়াই মনটা আজ়কে মেঘলা আকাশের মত।কিছুটা বিষন্ন।মনে হচ্ছে,খুব মনে হচ্ছে বৃস্টিতে ভিজলে হয়তো ভাল্লাগবে।বৃস্টির পানির সাথে হয়তো ধুয়ে যাবে মন খারাপগূলো।

কিন্তু না আজকে বৃস্টি হবেনা।আমি যে চাচ্ছি খুব বৃস্টি,এজন্য বৃস্টি হবেনা।আমি যা চাই,তা হবেনা এটা নিয়তির একটা সাধারন বিধান।এখন বিকেল পাচঁটা।গোসল না করে এখনো অপেক্ষা করছি একটা বৃস্টির জন্য।

প্রভু,একটা বৃস্টি দাও।যখনি হোক,যতো রাতই হোক।,একটা বৃস্টি চাচ্ছি আজকে।বৃস্টিতে গোসল করব বলে।বৃস্টির পানিতে মন খারাপগুলো ভাসিয়ে দিব বলে।হে আল্লাহ!ঝুম বৃস্টি না হোক,অল্প কয়েকফোঁটা বৃস্টি হলেও দাও।

অপেক্ষায় আছি একটা বৃস্টির জন্য।ঝুম একটা বৃস্টির জন্য। 
শেয়ার করুনঃ
৭২ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
রেটিং +১/-০
রেটিং দিতে লগইন করুন
পাঠকের মন্তব্য:
269066
১৮ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:৪৮
আইনজীবী লিখেছেন : আমি যেখানে বসে আছি, সেখানে বৃষ্টির আভাস পাওয়া যাচ্ছে 
১৮ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:৫২
228200

সত্য কথা লিখেছেন : কোথায়???আমি একটা বৃস্টির জন্য আজকে অনেক কিছু করতে পারি।বৃস্টি হলে বলেন,যদি কাছাকাছি হয়.....
১৮ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:৫৫
228203

প্রগতিশীল লিখেছেন : আইনজীবীর সাথে বৃষ্টিতে বেরুবেন নাকি? 
২৪ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:১৩
234654

সত্য কথা লিখেছেন : অবশেষে ভোর চারটায় এসেছিল বহুত কাঙ্খিত বৃস্টি,এবং অনেক অনেক্ষন ভিজেছিলাম।  
269079
১৮ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:৫৩
সংশপ্তক লিখেছেন : আপনার অপেক্ষার অবসান হউক। বৃষ্টি আইসা আপনারে ধুইয়া মুইছ্যা দিক... 
১৮ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:৫৮
228210

সত্য কথা লিখেছেন : লক্ষ্ণন দেখে মনে হচ্ছেনা আসবে।কিন্তু আমি অপেক্ষায় আছি....আপনার প্রার্থনার জন্য ধন্যবাদ।   
২৪ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:১৫
234655

সত্য কথা লিখেছেন : আপনার প্রার্থনা কবুল হয়েছে।অবশেষে ভোর চারটায় এসেছিল বহুত কাঙ্খিত বৃস্টি,এবং অনেক অনেক্ষন ভিজেছিলাম।ধন্যবাদ আপনাকে প্রার্থানার জন্য।
269508
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:২৮
লাল বৃত্ত লিখেছেন : বৃষ্টি আসবেই ওহে তৃষ্ণার্ত চাতকীনী। কেবল একটু অপেক্ষা, এর পর আকাশ কাঁদবে। আর হাসবে তোমার মন। এইতো মানব মুদ্রা। এক পিঠে হাসি আর অন্যপিঠে কান্না।
১৯ মে ২০১১; রাত ০১:৩৪
228683

সত্য কথা লিখেছেন : চাতকীনী তৃষ্ণার্ত হয়ে ছটফট করতে থাকে,তবু তার নজর আকাশের দিকে।তার দৃস্টি নিচে নামেনা।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য আর সান্তনা বাণী শূনাবার জন্য।   :
তবে বৃস্টি আসেনি এখনো।    ।
২৪ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৬:১৯
234660

সত্য কথা লিখেছেন : দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে ভোর চারটায় এসেছিল বহুত কাঙ্খিত বৃস্টি,এবং অনেক অনেক্ষন ভিজেছিলাম   
২৪ মে ২০১১; সন্ধ্যা ০৭:২৯
234769

লাল বৃত্ত লিখেছেন : এবং তারা ভিজে, বার বার ভিজে তবু তাদের ভেজার তৃপ্তি পূর্ণতা পায়না।